চিয়া সিড এর দাম কত ২০২৫

চিয়া সিড এর দাম কত ২০২৫: যারা স্বাস্থ্যের প্রতি অনেক বেশি সচেতনতা অবলম্বন করে তারা সকলেই প্রায়ই চিয়া সিড খেয়ে থাকে প্রতিনিয়ত। এটি এমন একটি খাবার যেটি খেলে আপনারা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন ভয়াবহ অসুখের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম একটি রোগ হচ্ছে গ্যাস। কারো যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে সে চিয়া সিড নিয়মিত খেতে পারে তাহলে তার সহজেই সেই সমস্যা দূর হয়ে যাবে। তবে অবশ্যই আপনার চিয়া সিড এর দাম কত 2025 সালে সেই সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের সঙ্গে সেই অসাধারণ চিয়া সিডের দাম কত সেই সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া যাক।

Table of Contents

চিয়া সিড এর দাম কত ২০২৫

চিয়া সিড এর দাম বর্তমানে ৬০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে বাংলাদেশের বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম গুলোতে এবং সরাসরি বাজারেও। বর্তমান সময়ে মার্কেটে চিয়া সিড বিভিন্ন অনলাইন পেইজের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়ে থাকে। যেগুলোতে আলাদা আলাদা দামের আলাদা আলাদা প্রকারের চিয়া সিড বিক্রি হয়ে থাকে। আপনি যদি ভালো মানের চিয়া সিড ক্রয় করতে চান সেক্ষেত্রে মিনিমাম ৬০০ টাকা প্রতি কেজিতে আপনাকে ব্যয় করতে হতে পারে।

আরো পড়ুন:

চিয়া সিড এর দাম কত টাকা কেজি

চিয়া সিড এর দাম ৬০০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা বা ৯০০ টাকা কেজি বর্তমানে মার্কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে দেখেশুনে বিবেচনা করে ভালো কোন প্লাটফর্ম থেকে ভালো কোয়ালিটির চিয়া সিড ক্রয় করার পরামর্শ দিচ্ছি। যেহেতু এটি একটি ঔষধীয় বা ওষুধ হিসেবে কাজ করে মোটামুটি তাই যদি খারাপ কোয়ালিটির কোন ধরনের চিয়া সিড আপনি খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার বিভিন্ন রকমের সমস্যা হতে পারে। তাই ভালো কোয়ালিটির চিয়া সিড খাওয়ার জন্য সর্বত্র আপনাকে পরামর্শ দিব।

চিয়া সিড এর দাম তালিকা

চিয়া সিড এর ওজনদাম কত
১ কেজি চিয়া সিড৬০০ টাকা
২কেজি চিয়া সিড১২,০০ টাকা
৫ কেজি চিয়া সিড৩,০০০ টাকা
১০ কেজি চিয়া সিড৬,০০০ টাকা
২০ কেজি চিয়া সিড১২,০০০ টাকা

চিয়া সিড ১০০ গ্রাম দাম কত

চিয়া সিড ১০০ গ্রাম দাম ৬০ টাকা থেকে ৯০ টাকার মধ্যেই বর্তমানে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। যারা মূলত সর্বপ্রথম বা প্রথমবার ট্রাই করার জন্য চিয়া সিড ক্রয় করতে চাচ্ছেন তারা অবশ্যই ১০০ গ্রামের একটি প্যাকেট ক্রয় করে নিতে পারেন। সর্বোচ্চ ৯০ টাকা পর্যন্ত খরচা হতে পারে ১০০ গ্রাম চিয়া সিড ক্রয় করার জন্য। এই ১০০গ্রাম চিয়া সিড আপনি চাইলে বেশ কয়েকদিন খেতে পারবেন পানির সঙ্গে মিশিয়ে খুব ভালো করে।

চিয়া সিড বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়

চিয়া সিড বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম বা ই-কমার্স ওয়েবসাইট গুলোতে বিক্রি করা হচ্ছে। তাছাড়াও ঢাকা কিংবা যে কোন বড় বড় শহরগুলোতে বিভিন্ন দোকানগুলোতেই পাওয়া যায় চিয়া সিড। তবে চাইলে আপনি খোঁজ করতে পারেন সুপার সবগুলোতে আপনার আশেপাশে সেখানেও আপনারা পেতে পারেন। যদি না পান সেই ক্ষেত্রে অনলাইনে বিভিন্ন বিশ্বস্ত প্লাটফর্ম রয়েছে যেখানে এই অসাধারণ চিয়া সিডটি বিক্রি করা হয় সেখান থেকে অর্ডার করে নিতে পারেন।

চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

চিয়া সিড (Chia Seed) বর্তমানে একটি বহুল পরিচিত সুপারফুড। এর পুষ্টিগুণ এবং বহুমুখী ব্যবহারের কারণে এটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এটি সাধারণত সালভিয়া হিস্পানিকা (Salvia Hispanica) গাছ থেকে পাওয়া যায়, যা মেক্সিকো এবং গواتেমালার আদিবাসী। চিয়া সিডে থাকা ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ গুণাবলীর জন্য এটি স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিদের জন্য একটি আদর্শ খাদ্য। তবে, প্রতিটি জিনিসের মতোই, এরও কিছু অপকারিতা রয়েছে।

চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ

চিয়া সিড ছোট আকৃতির হলেও এটি পুষ্টিতে ভরপুর। প্রতি ২৮ গ্রাম চিয়া সিডে সাধারণত নিম্নলিখিত পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়:

  • ফাইবার: ১১ গ্রাম
  • প্রোটিন: ৪ গ্রাম
  • ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: ৪.৯ গ্রাম
  • ক্যালসিয়াম: দৈনিক প্রয়োজনীয়তার ১৮%
  • ম্যাগনেসিয়াম: দৈনিক প্রয়োজনীয়তার ৩০%
  • ফসফরাস: দৈনিক প্রয়োজনীয়তার ২৭%

চিয়া সিডে আরো রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাসিয়াম, আয়রন এবং ভিটামিন বি।

চিয়া সিডের উপকারিতা

১. হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা

চিয়া সিড ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর, যা রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ায়। এটি উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

২. ওজন কমাতে সহায়ক

চিয়া সিডে প্রচুর ফাইবার রয়েছে, যা দীর্ঘ সময় পেট ভরতি রাখে। এটি ক্ষুধার পরিমাণ কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৩. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে

চিয়া সিড রক্তে গ্লুকোজ শোষণের হার কমিয়ে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।

৪. হাড়ের শক্তি বাড়ায়

চিয়া সিডে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস রয়েছে, যা হাড়কে শক্তিশালী করে এবং অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধে সাহায্য করে।

৫. পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি ঘটায়

চিয়া সিডের উচ্চ ফাইবার উপাদান অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

৬. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়

চিয়া সিডের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের বার্ধক্য রোধে সাহায্য করে। এটি ত্বককে কোমল ও দীপ্তিময় রাখে।

৭. শরীরের ডিটক্সিফিকেশন

চিয়া সিডে থাকা ফাইবার শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয়, যা লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায়।

চিয়া সিডের অপকারিতা

যদিও চিয়া সিডের উপকারিতা প্রচুর, তবে এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

১. অতিরিক্ত ফাইবারজনিত সমস্যা

চিয়া সিডে প্রচুর ফাইবার রয়েছে। অতিরিক্ত ফাইবার গ্রহণ করলে পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।

২. অ্যালার্জির ঝুঁকি

কিছু মানুষের চিয়া সিডের প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে। এতে ত্বকের র‍্যাশ, শ্বাসকষ্ট বা বমিভাব হতে পারে।

৩. রক্ত পাতলা করার ঝুঁকি

চিয়া সিডে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা রক্ত পাতলা করার প্রক্রিয়াকে বাড়িয়ে তোলে। তাই যাঁরা রক্ত পাতলা করার ওষুধ সেবন করেন, তাঁদের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে।

৪. নিগলতে সমস্যা

শুকনো চিয়া সিড খাওয়ার সময় এটি জলে ফুলে বড় হয়ে যেতে পারে, যা গলায় আটকে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

৫. রক্তচাপ কমানোর ঝুঁকি

চিয়া সিড উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হলেও, এটি রক্তচাপ অতিরিক্ত কমিয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খান, তাঁদের জন্য এটি সমস্যার কারণ হতে পারে।

চিয়া সিড ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি

১. জলে ভিজিয়ে খাওয়া: চিয়া সিড খাওয়ার আগে এটি অন্তত ১০-১৫ মিনিট জলে ভিজিয়ে নিতে হবে। এতে এটি সহজে হজম হয় এবং গলায় আটকে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে না।

২. স্মুদি বা জুসে মিশিয়ে: চিয়া সিড স্মুদি বা জুসে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এটি স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করে।

৩. দই বা সালাদে যোগ করা: দই বা সালাদে চিয়া সিড যোগ করলে এটি খাবারের পুষ্টিগুণ বাড়ায়।

৪. সুপারফুড হিসেবে ব্রেকফাস্টে: ব্রেকফাস্টে ওটস বা গ্রানোলার সাথে চিয়া সিড ব্যবহার করা একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস।

চিয়া সিড ব্যবহারে সতর্কতা

১. দৈনিক ২০-২৫ গ্রাম চিয়া সিড খাওয়া নিরাপদ।
২. গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি ব্যবহার করা উচিত নয়।
৩. যদি কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তবে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

আমাদের শেষ কথা

আশা করছি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ার পরে আপনি চিয়া সিডের দাম কত সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এখন যদি আপনার এটি প্রয়োজন হয় সেইক্ষেত্রে আপনি খুব সহজেই অর্ডার করে দিতে পারেন মোবাইলের মাধ্যমে কিংবা সরাসরি বাজারে গিয়ে ক্রয় করতে পারেন। আর অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করুন যাতে করে তারা এই অসাধারণ ওষুধি উপাদান টি ক্রয় করে নিজেদের স্বার্থের প্রতি সচেতন হতে পারে।

Leave a Comment